মোঃ জামাল উদ্দিন: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়ার বিরুদ্ধে রয়েছে অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগের পাহাড়।
জানা গেছে- বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ ও গভীর নলকূপ (ডিপ-টিউবওয়েল) দেওয়ার নামে মানুষের নিকট থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছেন ইউপির বিভিন্ন এলাকার মানুষজন।
লামাকাজিস্থ রাকিব রাবেয়া হাই-স্কুল এন্ড কলেজ পরিচালনা কমিটির বিগত ২০২১ সালের (১৩ মার্চ) ৮নং সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে- কলেজ বিল্ডিং তৃতীয় তলার ওয়াশবল্ক ও কমনরুমের কাজ দ্রুত শুরু করার নিমিত্তে বিদ্যালয় ফান্ড থেকে এক লক্ষ টাকা লামাকাজি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়াকে ঋণ প্রদান করা হয়েছিল।
কার্যবিবরণীতে আরও উল্লেখ রয়েছে- প্রজেক্টের বিল পাওয়া মাত্রই সেই টাকা পরিশোধ করা হবে। পরবর্তীতে চেয়ারম্যান হাই-স্কুল কলেজ থেকে ঋণ বাবদ নেওয়া এক লক্ষ টাকা পরিশোধ করার কোন হদিস আর মিলেনি।
এদিকে, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বিশ্বনাথ উপজেলার আওতাধীন সবকটি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন কার্যক্রমে সরকার নির্ধারিত ফি এর অতিরিক্ত ফি আদায় সাপেক্ষে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
চেয়ারম্যান ধলা মিয়ার মাধ্যমে ডিপ-টিউবওয়েল ও পাকা ল্যাট্রিন পাওয়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে- লামাকাজি ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি প্রতিবেদককে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেনে। যাহার সমূহ প্রমাণাদি প্রতিবেদকের নিকট সংরক্ষিত।
লামাকাজি রাকিব রাবেয়া হাই-স্কুল এন্ড কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল রাসেল আহমদ ধলা মিয়া চেয়ারম্যান এক লক্ষ টাকা ঋন নেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান- কলেজ বিল্ডিংয়ের কাজ চলাকালীন সময়ে ধলা মিয়া চেয়ারম্যানকে এক লক্ষ টাকা ঋন দেওয়া হয়েছিল পরবর্তীতে সেই টাকা পরিশোধ করা হয়েছে শুনলেও কিন্তু টাকা পরিশোধের কোন ডকুমেন্ট তিনি আজও দেখতে পাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজ পরিচালনা কমিটির এক সদস্য জানান- কলেজের ফান্ড থেকে কাউকে এভাবে টাকা ঋন দেওয়ার নিয়ম নেই। টাকা ঋন দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তিনি প্রতিবাদ করেছিলেন কিন্তু ধলা মিয়া চেয়ারম্যানের ক্ষমতার প্রভাবের কাছে পেরে উঠেন নি। অন্যদিকে দেখা যায়- কবির হোসেন ধলা মিয়া চেয়ারম্যান ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার দুই মেয়ে- সাদিকা বেগম ও রাসিদা বেগমের লেখাপড়ার ফি মওকুফ করিয়ে ছিলেন।
কবির হোসেন ধলা মিয়ার সাথে লামাকাজি ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে দেখা হলে তিনি জানান- রাকিব রাবেয়া হাই-স্কুল এন্ড কলেজ ফান্ডের এক লক্ষ টাকা ঋন নিয়েছিলাম। পরবর্তীতে সেই টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছেন। ডিপ-টিউবওয়েল দেওয়ার নামে কারো কাছ থেকে টাকা পয়সা নেয়নি।
কলেজ ফান্ডের টাকা এভাবে ঋন নেয়া যায় কিনা? এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে বলেন- তার বিরুদ্ধে যেসকল অভিযোগ আনা হয়েছে তা সব মিথ্যা।
বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনন্দা রায়ের ব্যবহৃত সরকারি সেলফোনে যোগাযোগ করলে তিনি মিটিংয়ে থাকায় বক্তব্য সংগ্রহ করা যায় নি।
Leave a Reply